ঈমান, আমল ও আখলাক, দাওয়াত ও তাবলীগ সম্পর্কে তাবলীগী বুর্জুগ, ইসলামী চিন্তাবিদ, আলেম ও পাকিস্থানের মাওলানা খোরশেদ আলমের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আজ শুরু হয়েছে আলমি সূরা তত্বাবধানে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। হালকা বাতাস ও মিষ্টি রোধের আবহাওয়ায় মুসল্লেিদর মনে সতেজ আমেজ। মুরব্বীদের গায়ে সাদা পাঞ্জাব মাথায় সাদা টুপি, বগলে বা হাতে জায় নামাজ, শিশু-কিশোরদের গায়ে বাহারী রংয়ের পাঞ্জাবী পায়জামা ও মাথায় টুপি পরিহিত দলবেধে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে। সেখানে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সড়ক মহা-সড়কে যে যা পারছেন পত্রিকা পলিথিনের সামিয়ানা প্লাষ্টিকের বস্তা বিছিয়ে শৃংখলাবদ্ধ ও সারিবদ্ধভাবে বসে পরেন বিশে^র দ্বিতীয় বৃহত্তম জুম্মার নামাজ আদায়ে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লীদের অংশগ্রহণে গতকাল শুক্রবার বৃহত্তম জুম্মার নামাজ আদায় হয়েছে। আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর। এ পর্বে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। শুক্রবার বাদ ফজর নামাজের পর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাট। সকাল ১০টা থেকে তালিম করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। দুপুর পৌনে ২টায় জুমার নামাজ শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা জুবায়ের। জুমার নামাজে খুতবা পাঠ শুরু হয় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। ইজতেমার ময়দানের মুসল্লি ছাড়াও জুমার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মুসল্লি ইজতেমাস্থলে এসে হাজির হন।শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকেই বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে হাজার হাজার মুসল্লি জড়ো হন। শুকনো খাবার, পানি, বিছানাসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে মুসল্লিরা সারিবদ্ধভাবে ছুটতে থাকেন টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমা ময়দানের দিকে। জুমার নামাজের আগেই ময়দান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। জুমার নামাজে অংশ নেন লাখো মুসল্লি। ওই সময় ইজতেমার ময়দান ছাপিয়ে আশপাশের সড়কগুলোতে ছড়িয়ে পড়েন মুসল্লিরা। ইজতেমা ময়দানে স্থান না পেয়ে অনেকে বিভিন্ন ভবনের ছাদে নামাজ আদায় করেন।জুমার নামাজের সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকেও সড়কটি নামাজের সময় বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। নামাজের পর পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। তবে মুসল্লিদের ভিড়ের কারণে খুবই ধীর গতিতে চলছে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন। আশুলিয়া থেকে আসা মুসল্লি হাবিবুর রহমান বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টায় বাসা থেকে বের হয়েছি ইজতেমার মাঠে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য। কিন্ত অনেক চেষ্ঠা করে মুল মাঠে যেতে পারেনি। রাস্তায় নামাজ পড়েছি। আমি দেখেছি যে যেখানে পারছে সেখানেই বসে পড়ছে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য। শুক্রবার দুপুর ১ টা ৩৭ মিনিটে মিনিটে খুতবা শুরু হয়। জুম্মার নামাজ শেষ হয় দুপুর ১ টা ৫১ মিনিটে। জুম্মার নামাজে ইমামতি করেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ স্থানীয় মুরব্বী এবং কাকরাইল মারকাজ মসজিদেও ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের হোসাইন। ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এদিকে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে নিয়োজিত ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ইজতেমাস্থল ও আশে- পাশের খাবারের দোকান ও হোটেলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চলছে। অ- স্বাস্থ্যকর পরিবেশে পচা-বাসী খাদ্য পরিবেশন ও ভেজাল খাদ্য বিক্রয়ের অভিযোগে বিভিন্ন খাবারের দোকান ও হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাসহ জরিমানা আদায় করা হয়। তবে এরির্পোট লেখা পর্যন্ত কতগুলো দোকান বা প্রতিষ্ঠানে কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে তা জানা যায়নি।এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন এলাকার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, চুরি, ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের পূর্ববর্তী তালিকা অনুযায়ী গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম, উত্তরা, তুরাগ থানা এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশত চোর, ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বিভিন্ন থানা সূত্রে জানা গেছে। ইজতেমা ময়দানে আগত মুসলিদের নতুন যে কোন সমস্যা সমাধানকল্পে ময়দানে মাসলেহাল জামাতের কামরা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বসে ওই জামাতের মুরুব্বিরা উদ্বুত সমস্যার সমাধান দিবেন বলে জানিয়েছেন।টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় কয়েক শতাধিক মুসল্লি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মুসল্লি হার্টের সমস্যাসহ ঠান্ডা, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেটের পীড়া জনিত কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তারেক। এছাড়া ইজতেমাস্থলের পার্শ্ববর্তী ফ্রি-মেডিক্যাল ক্যাম্পগুলোতে সহশ্রাধিক মুসল্লি বিনামূল্যে ওষুধ সংগ্রহ ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৯ জনকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার বলেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে পুরো এলাকায় নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর ৬ হাজারের অধিক সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে পুরো এলাকায়। মাঠের বিভিন্ন অংশে বসানো হয়েছে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। এছাড়া থাকছে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়েতে তল্লাশির ব্যবস্থা। পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার, চেকপোস্ট, ইজতেমা ময়দানের চারপাশে হেলিকপ্টার টহলসহ রয়েছে হেলিকপ্টার ওঠা-নামার জন্য দুটি পয়েন্টে হ্যালিপ্যাড। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে একাধিক কন্ট্রোল রুম ও সাব কন্ট্রোল রুম।বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত বিশ্বের ৪৩টি দেশের এক হাজার ৫৬৯ জন বিদেশি মেহমান ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। ৪৩টি দেশের মধ্য