বাদল রাজবংশী –
ঢাকা নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মাহাবুবুর রহমান লিটন (প্যানেল চেয়ারম্যান) এর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
গত ২০২২ সাল থেকে চুড়াইন ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন কাজ ও সরকারি বরাদ্দে চুড়াইন এলাকার রাস্তা ঘাট ঘাটের উন্নয়ন কাজে অনিয়ম দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ভোটার ও ইউপি সদস্যরা। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চুড়াইন আকারবাগ মুন্সিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তা,লোহার ব্রীজ, মরিচপট্টির রাস্তা,
সরকারি সাব মার্সিবল টিউবওয়েল বিতরণে ১০ হাজার ৫ শত টাকার অনুকূলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা সহ অসংখ্য অনিয়ম নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন ইউপি সদস্যরা।
এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হাসেম মেম্বার, ইউসুফ মেম্বার সহ স্থানীয় জনগন প্যানেল চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দিতে থাকেন। অভিযোগের মধ্যে,মুন্সিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দের স্কুল ফান্ডের ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়া,মরিচপট্টির রাস্তায় ৫ লাখ টাকার সাথে এলাকার মানুষের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া,লোহার পুল নির্মাণে ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা বরাদ্দের টাকা থেকে ৫৯ হাজার টাকা মেরে খাওয়া,
সরকারের সাব মার্সিবল টিউবওয়েল বিতরণ করতে সরকারের চাঁদার চেয়ে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়, উন্নয়ন প্রকল্প কাজের কমিটিতে অনিয়ম_সভাপতি করেছেন স্থানীয় মেম্বার কে। অথচ প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করা হয়েছে। যিনি সভাপতি তিনিই জানেন না তিনি ঐ প্রকল্পের কাজের সভাপতি ও কবে নাগাদ কাজ শেষ হয়েছে।
আর্থিক লেনদেন লেবার বিল,ভাউচারে স্বাক্ষর,সরকারি বিল তোলা এসবের ধারে কাছেও নেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি।
রাস্তার সিসি ঢালাই কাজে কত টাকা বরাদ্দ রয়েছে,নির্মাণ কাজে কত টাকা খরচ হলো,আর কত টাকা রইল সভাপতি তিনি কিছুই জানেন না। এছাড়া এলাকার জনগণ থেকে চাঁদা তোলা, সেই চাঁদা কোথায় গেল এর কোন হদিস নেই। এবিষয়ে ইউসুফ মেম্বার বলেন,আজ ও গতকাল আমি জানতে পারলাম আমার এলাকায় ৪টা কাজ হয়েছে। সেই কাজের সভাপতি আমি নিজে,আমার নামে নথিপত্র আছে। সেই নথিপত্রের বরাদ্দে লাখ লাখ টাকা অনিয়ম দুর্নীতি আছে। ঠিকমত সিডিউল অনুযায়ী রাস্তার নির্মাণ কাজ হয়নি। নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। রাস্তার পাশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে লাখ লাখ টাকা কম খরচ হয়েছে। সেই টাকাপয়সা লুটপাট দুর্নীতি অনিয়ম করে আমাদের ফাঁসানোর জন্য এই অপকর্ম গুলো করেছেন কথিত প্যানেল চেয়ারম্যান লিটন। তার ইশারায় ইউনিয়ন পরিষদ চলেছে। আমাদের চেয়ারম্যান বিদেশে থাকায় তিনি তৎকালীন সময়ে এই অনিয়ম গুলো করে বেড়িয়েছেন। তাই এখন সময় হয়েছে আমি আপনাদের মাধ্যমে এর সঠিক তদন্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানাই।
অপরদিকে হাসেম মেম্বার তিনিও একই সুরে লিটন মেম্বারের অনিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন,মাহাবুবুর রহমান লিটনের কথা আর কি বলব,তিনি একজন দুর্নীতি পরায়ণ মানুষ। আমাদের এলাকার উন্নয়ন কাজে তিনি অজ্ঞাত অন্য একজনকে সভাপতি বানিয়ে আমার ওয়ার্ডের কাজ করেছেন। তা আমি জানি না। আরেকটি জায়গায় মহিলা মেম্বার কে সভাপতি করে এলাকার কিছু কাজ করেন। সেখানেও অনিয়ম করেছেন। এখন শুনছি সরকারের বরাদ্দ ও ইউনিয়ন পরিষদের লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ করে নকল ভাউচার, আমাদের ভূয়া নকল স্বাক্ষর ও অবিকল জাল করে আমাদেরকে ছোট করেছেন তিনি। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আমরা জড়িত থাকলে আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করবেন এই প্রত্যাশা রাখছি। নিউজ
করলে আমরা তা মেনে নিব। অন্যায় কারীর শাস্তি হোক আমরা চাই। অন্যায়কারী যেই হোক আমি আর আমরা নাই। সবার মুখোশ খুলে দেন। এই নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ ও সমাজ জানুক কারা দুর্নীতিবাজ,কারা অনিয়মের সাথে জড়িত। আমাদের সমাজে এখন সৎ ও ভাল মানুষের বড়ই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে মাহাবুবুর রহমান লিটনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইলে সংযোগ
দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে মোবাইল নেট অপারেটরের
পক্ষ থেকে জানান।